বন্ধুরা বর্তমান সময়ে আতঙ্কের আরেক নাম রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ । এই সাপটি এত পরিমান বিষাক্ত যে এই সাপটি দংশন করার ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে মানুষ মারা যাচ্ছে । এছাড়াও বন্ধুরা সোশ্যাল মিডিয়াতে এত পরিমাণ এই সাপটি নিয়ে আলোচনা চলতেছে। যে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রবেশ করলে শুধু রাসেল ভাইপার আর রাসেল ভাইপার।
তাই বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবঃ রাসেল ভাইপার সাপ কতটা বিষাক্ত? রাসেল ভাইভার সাপ কোথায় থেকে এসেছে? রাসেল ভাইপার সাপ থেকে বাঁচার উপায়? রাসেল ভাইপার সাপের বাচ্চা কতগুলো হয়? রাসেল ভাইয়ের সাথে দোয়া? এ ছাড়া বন্ধুরা রাসেল ভাইপার সাপ সম্পর্কে সকল প্রকার খবরা-খবর আপনাকে সামনে তুলে ধরবো। চলুন বন্ধুরা শুরু করা যাক-
কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে রাসেল ভাইপার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। বিষধর রাসেল ভাইপারের দংশনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে ক্ষেতে ফসল করতে গিয়ে এই সাপের আক্রমণের শিকার হচ্ছে চাষিরা সহ সাধারণ মানুষ।
রাসেল ভাইপার সাপ কতটা বিষাক্ত?
বন্ধুরা চলতি বছরে রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা গেছে দশ জনের মত। রাসেল ভাইপার দেখতে অজগরের বাচ্চার মত। ছোট সরু লেজের সাপের দৈর্ঘ্য তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে।রাসেল ভাইপারের মাথা চ্যাপ্টা শুরু আকারের এবং ঘাড় থেকে আলাদা।
শরীর জুড়ে অনেকটা চাঁদের মতো গাঢ় বাদামী গোল গোল দাগ রয়েছে। দেহের এরকম বৈশিষ্ট্যের জন্য শুকনো পাতা, ধানক্ষেতের মধ্যে খুব সহজেই লুকিয়ে থাকতে পারে।সাধারণত সব সাপের একটি বৈশিষ্ট্য মানুষকে এড়িয়ে চলা। কিন্তু রাসেল ভাইপার এর বিষয়টা একেবারে উল্টো। এরা মানুষ দেখলে আরো আক্রমনাত্মক হয়ে যায়। বিষধর সাপ হিসেবে পৃথিবীতে রাসেল ভাইপারের অবস্থান পঞ্চম তম।
হিংস্রতার দিক দিয়ে এদের অবস্থান সবার উপরে । তাই বলা যায় বিশ্বের সবথেকে হিংস্র সাপ হলো রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ।এদের হিংস্রতা এত বেশি যে এক সেকেন্ডের অনেক কম সময়ে এরা সোবল দিতে পারে।
রাসেল ভাইপার সাপের বাচ্চা কতগুলো হয়?
বন্ধুরা আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগে রাসেল ভাইপার সাপ কয়টি করে ডিম পাড়ে? আর রাসেল ভাইপার সাপ কয়টি করে বাচ্চা দেয়? বন্ধুরা এই প্রশ্নের উত্তর নিয়ে চলে এসেছি। চলুন বন্ধুরা জেনে নিই
বেশিরভাগ সাপ ডিম পারলেও রাসেল ভাইপার বাচ্চা দেয়। গর্ভধারণ শেষে স্ত্রী রাসেল ভাইপার সাধারণত ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে রাসেল ভাইপারের আশিটি পর্যন্ত বাচ্চা দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে।বন্ধুরা রাসেলভাইপার ডিম পারে না।
রাসেল ভাইপার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ কি?
বন্ধুরা রাসেল ভাইপার বৃদ্ধি পাওয়ার অনেক কারণ রয়েছে।বন্ধুরা বেজি গুইসাপ সহ প্রকৃতি থেকে সাপের শত্রু বিলীন হয়ে যাওয়া । আবার ইদুর ,ব্যাঙ রাসেল ভাইপারের প্রিয় খাবার যা ফসলের খেতে থাকে। ফলে ওইসব জায়গায় সাপের পর্যাপ্ত খাবার থাকাই রাসেল ভাইপার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এরা সাধারণত দিনের বেলায় সক্রিয় থাকে । এরা দিনের বেলাতে বেশি মানুষকে আক্রমণ করে। এরা ঘন জঙ্গল এড়িয়ে চলে । সাধারণত ঘাসের ঢাকা খোলা মাঠ ফসলি জমিতে বেশি থাকে।
কিভাবে বুঝব রাসেল ভাইপার কামড় দিয়েছে?
বন্ধুরা আমরা সবাই চলাচল করার সময় অনেক সময় নানান পোকামাক কামড় দেয়। আমার বন্ধুরা অনেক সাপে কামড় দেয়। কিন্তু আমরা বুঝতে পারি না । বন্ধুরা যদি আমাদের রাসেল ভাইপারে কামড় দেয় তাহলে আমরা কিভাবে বুঝব। যে আমাদের রাসেল রাসেল ভাইপারই কামড় দিয়েছে। চলুন বন্ধুরা জেনে নিই রাসেল ভাইপার কামড় দিলে শরীরে কোন কোন লক্ষণ দেখা দেয়।
বন্ধুরা রাসেল ভাইপার কামড় দিলে কামড়ের জায়গায় পচন্ড ব্যথা হয়। আর ফুলে যায়। কয়েক ঘন্টার মধ্যে আশেপাশে জায়গাও ফুলে যায়। বিভিন্ন মেডিকেল থেকে জানা গেছে রাসেল ভাইপার কামড় দিলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোগীর মৃত্যু হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যদি এই সময়ে সীমার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করা যায় তবে হয়তো রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী আমাদের দেশে বছরে অন্তত ৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে সাপে কামড়ায়। যার মধ্যে অন্তত ৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। আর গত এক মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এমনকি ঢাকার আশেপাশেও দেখা গেছে রাসেল ভাইপার ।আবার অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
রাসেল ভাইপার সাপ কোথা থেকে এসেছে?
বন্ধুরা বিশেষজ্ঞরা বলছে পানির স্রোতে পদ্মা নদীসহ অন্যান্য নদীর দিয়ে ভারত থেকে রাসেল ভাইপার সাপ বাংলাদেশে প্রবেশ করতেছে। যার ফলে পদ্মা নদীর পাশাপাশি অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক পরিমাণ রাসেল ভাইপার ছড়িয়ে পড়েছে।
বন্ধুরা বাংলাদেশের কিছু সংখ্যক জেলাতে অল্প সংখ্যক রাসেল ভাইপার ছিল। তবে বন্ধুরা এই পদ্মা নদী ধরে ভারত থেকে বর্তমান সময়ে বিপুল পরিমাণ রাসেল ভাইপার সাপ বাংলাদেশ প্রবেশ করতেছে।
রাসেলস ভাইপার সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে যেসব জেলায়
বাংলাদেশের ২৮ টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপার।বেশি ছড়াচ্ছে পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলা গুলোতে।এই তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ সরকারের ভেনম রিসোর্ট সেন্টার থেকে।গবেষকরা বলতেছেন অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ছড়াচ্ছে রাসেল ভাইপার। রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে দেড় বছরের শুধু রাজশাহী মেডিকেলে মারা গেছে অন্তত 18 জন।
একসময় রাসেল ভাইপার সাপ রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাতে বেশি দেখা গেলেও।বর্তমানে পদ্মার তীরবর্তী কয়েকটি জেলা ও ও চর অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালী ও ভোলা জেলাতেও এর দেখা মিলেছে।তবে সবচেয়ে বেশি আনাগোনা মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, শরীয়তপুরসহ পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদীর আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে।
প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ রাসেল ভাইপার সাপের বাংলা নাম কি?
উত্তরঃ রাসেল ভাইপার সাপের বাংলা নাম হল চন্দ্রবোড়া।
প্রশ্নঃ কোথায় থেকে ভাইপার ভাইভার বাংলাদেশে আসতেছে?
উত্তরঃ পদ্মা নদী দিয়ে ভারত থেকে রাসেল ভাইপার বাংলাদেশের প্রবেশ করতেছে।
প্রশ্নঃ হিংস্রতার দিক দিয়ে রাসেল ভাইপার কততম সাপ?
উত্তরঃ হিংস্রতার দিক দিয়ে রাসেল ভাইপার ১ম ?
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের কয়টি জেলাতে রাসেল ভাইপার ছড়িয়ে পড়েছে?
উত্তরঃ বাংলাদেশের ২৮টি জেলাতে রাসেল ভাইপার ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রশ্নঃ কোন নদী দিয়ে বেশি রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে প্রবেশ করতেছে?
উত্তরঃ পদ্মা নদী দিয়ে রাফেল ফাইবার বাংলাদেশের বেশি প্রবেশ করতেছে।
প্রশ্নঃ রাসেল ভাইপার কি ডিম পারে?
উত্তরঃ না বন্ধুরা রাসেল ভাইপার ডিম পারে না। রাসেল ভাইপার সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে।
সতর্কতামূলক বার্তা
বন্ধুরা আপনারা সবাই সাবধানে চলাফেরা করবেন। ফসলের জমিতে যাওয়ার পূর্বে মোটা জুতা পরে যাবেন। রাত্রিবেলা চলাফেরা ক্ষেত্রে লাইট ব্যবহার করবেন। সাথে নিচের দিকে তাকিয়ে হাটবেন। আপনার বাসার আশপাশে যত জঙ্গল রয়েছে সবগুলো পরিষ্কার করবেন। বলা তো যায় না সেখানেও সাপ থাকতে পারে।
আপনাদের যদি কোন সাপে কামড় দেয়। সে ক্ষেত্রে দ্রুত আপনার নিকটস্থ মেডিকেলে চলে যাবেন।সাপুড়ে বা কবিরাজের থেকে চিকিৎসার নেওয়ার থেকে বিরত থাকবেন। ক্ষতস্থানে বেধে রাখবেন না। পাশাপাশি ক্ষতস্থান কেটে পরিষ্কার করবেন না।। আপনারা যত দ্রুত সম্ভব মেডিকেলে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
উপসংহার
বন্ধুরা আজকের পোস্টটি এখানে শেষ করছি। এমন
শিক্ষনীয় পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। এছাড়া বন্ধুরা আপনারা নিচের দেওয়া পোস্ট গুলো পড়তে পারেন। আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে। তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে করতে পারেন । আমাদের টিম আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবে। ইনশাল্লাহ।